ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের গ্যারান্টি: কী এবং কীভাবে? (প্রথম কিস্তি)

যোগেন্দ্র যাদব
লিখেছেন যোগেন্দ্র যাদব পড়ার সময় 3

যোগেন্দ্র যাদব

“এ বছর রসুন চাষির সর্বনাশ হয়েছে। এক কেজি রসুন রোপণ করলে চাষির খরচ হয় ১২ থেকে ১৫ টাকা। কিন্তু এ বছর বাজারে তিনি পাচ্ছেন মাত্র ৩ থেকে ৫ টাকা। মান্ডিতে নিয়ে যাওয়ার খরচ উঠছে না। একটা সময় ছিল যখন রসুন বিক্রি করে সেই টাকায় মোটর সাইকেল বা গাড়ি কিনতেন চাষিরা। এ বছর ঋণও শোধ করতে পারেননি”। এই গল্পটি পশ্চিম মধ্যপ্রদেশের এক কৃষকের। রাজস্থান ও গুজরাত সংলগ্ন এই এলাকায় রসুন ছাড়াও চাষিরা পেঁয়াজ চাষ করেন। এ বছর তাতেও লোকসান হচ্ছে। খরচ প্রতি কেজি ৬ থেকে ৭ টাকা, কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ টাকা কেজি।

সমস্যা শুধু এবছরের বা মধ্যপ্রদেশের নয়। এই পর্যন্ত ভারত জোড়ো যাত্রায় আমি ৭টি রাজ্যের কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছি। একেক জায়গার সমস্যা একেক রকম। কিন্তু একটি যন্ত্রণা দেশের প্রত্যেক কৃষককে এক করে দেয়: বাজারে ফসলের সঠিক দাম পাওয়া যায় না। পেঁয়াজ এবং রসুনের মতো শাকসবজি বা ফলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নেই, তবে যে সব ফসলের সহায়ক মূল্য ঘোষণা করা হয়েছে তাও পাওয়া যায় না। মুগ, ছোলা, অড়হরের মতো ডালের জন্য কাগজে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করা হয় কিন্তু বিক্রি হয় না। ফলে বাজারে ঘোষিত ন্যূনতম মূল্য থেকে এক হাজার বা দুই হাজার টাকা ক্ষতি হয় কৃষকের। ধান ও গমের সরকারি ক্রয় সত্ত্বেও অধিকাংশ জায়গায় কৃষক লোকসানের মুখে পড়ে ব্যবসায়ীর কাছে ফসল বিক্রি করেন।

সেই কারণে সারা দেশের কৃষক আন্দোলনে নানা মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, একটি দাবিতে ঐক্যমত রয়েছে: এমএসপি আইনত নিশ্চিত হওয়া উচিত। দিল্লিতে ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের আগে কয়েকজন কৃষক নেতা এবং বিশেষজ্ঞ ছাড়া অধিকাংশ চাষি এমএসপি’র নামও শোনেননি। কিন্তু এখন এমএসপি-র কথা প্রত্যেক চাষি ও স্থানীয় কৃষক নেতাদের মুখে মুখে। সাধারণ কৃষক জানেন না এমএসপি কী এবং কীভাবে এটি অর্জন করা যায়, তবে তিনি জানেন যে তাঁর কিছু অধিকার রয়েছে যা তিনি পাচ্ছেন না। এই ইস্যুতে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য এটাই যথেষ্ট।

কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন কৃষক নেতা ও সংগঠন বিভিন্নভাবে ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের আইনি গ্যারান্টির দাবি তুলে ধরেন। এই প্রশ্নে স্পষ্টতা থাকা প্রয়োজন। এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি মানে হল প্রত্যেক কৃষককে সম্পূর্ণ ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাওয়ার আইনি গ্যারান্টি দেওয়া হবে। …

(অনুবাদ – শ্রেয়ণ)

দ্বিতীয় তথা শেষ কিস্তি আগামীকাল পড়তে চোখ রাখুন জয় কিষাণের পেজে

ট্যাগ করা হয়েছে: ,
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
মতামত দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *