কৃষক আন্দোলনের সময় কৃষক নেতৃত্বের মুখ হিসেবে আরও অনেক কৃষক নেতার সঙ্গে উঠে এসেছিলেন যোগেন্দ্র যাদব। কৃষক আন্দোলনের সাফল্যের সঙ্গে জুড়ে আছে তাঁর নাম। বিজেপির জন-বিরোধী, কৃষক-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে তিনি সবসময় প্রতিরোধের এক উজ্জ্বল মুখ । কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষকদের ব্যাপারে উদাসীনতা তাঁকে আবার মুখ খুলতে বাধ্য করল। তিনি সম্প্রতি কৃষকদের সমস্যা নিয়ে মোদি সরকারকে তুলোধোনা করেন।
‘কিষাণ সম্মান নিধি’র বাস্তবতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও সম্প্রতি সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ১৯ নভেম্বর সারা দেশে ‘ফতেহ দিবস’ উদযাপন এবং কিষাণ আন্দোলনের আসন্ন কর্মসূচি ঘোষণা তাঁকে কৃষক আন্দোলন নিয়ে আশাবাদী করেছে। চলতি সপ্তাহে তথ্যের অধিকার জানা আইনের মামলায় জানা যায় গত লোকসভা নির্বাচনের আগে অনেক ধুমধাম করে চালু করা কিষান সম্মান নিধি যোজনার সুবিধাভোগীর সংখ্যা আশ্চর্যজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে ।’দ্য হিন্দু’-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, লোকসভা নির্বাচনের আগে, এই প্রকল্পের প্রাথমিক কিস্তিতে ১১.৮৪ কোটি কৃষকের অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর করা হয়। সরকার বলেছিল যে এই প্রকল্পের আওতায় ১৪ কোটি কৃষক পরিবারকে নিয়ে আসা হবে। কিন্তু চলতি বছর ১১ তম কিস্তি আসার সময়, সুবিধাভোগীর সংখ্যা মাত্র ৩.৮৭ কোটিতে নেমে আসে।
দ্য হিন্দু সরকারকে তার কারণ প্রকাশ করতে বললেও, সরকার সাড়া দেয়নি। কিন্তু এই রিপোর্ট প্রকাশ নিয়ে হৈচৈ হওয়ার পর, সরকার কিছু ভিন্ন পরিসংখ্যান দিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এবং সমস্ত দোষ রাজ্য সরকারগুলির উপর চাপানো হয়েছে। এখানে প্রশ্ন জাগে এই পরিসংখ্যান ভুল হলে সরকার নিজেই তথ্যের অধিকার মামলা আইন কেন শুরু করেছে। সরকার নির্দেশ করছে যে এই পরিসংখ্যানগুলি কেবলমাত্র সেই কৃষকদের জন্য যারা ধারাবাহিকভাবে সমস্ত কিস্তি পেয়েছেন। তা সত্ত্বেও, এটি প্রকল্পটির একটি গুরুতর ব্যর্থতা দেখায়।এমনকি রাজ্য সরকারগুলির দোষ থাকলেও, প্রধানমন্ত্রী এটি থেকে দায় ঝেড়ে ফেলতে পারেন না কারণ যে রাজ্যগুলিতে সুবিধাভোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হ্রাস পেয়েছে (যেমন মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, বিহার এবং মহারাষ্ট্র) বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিজেপি শাসিত ছিল।
এ সব থেকে স্পষ্ট যে, এই সরকার কৃষকদের প্রতি দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে সিরিয়াস নয়, দাবিতেও সত্য নয়, ঘোষণার ব্যাপারেও নিশ্চিত নয়, লিখিত আশ্বাসও রাখে না। স্পষ্টতই, এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের আবার তাদের সংগ্রাম শুরু করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলেও জানান যোগেন্দ্র যাদব।
সূত্র- পাঞ্জাব কেশরি
কৃষক আন্দোলনের রাজনৈতিক দিশা নির্ধারণ করা প্রয়োজন: যোগেন্দ্র যাদব

মতামত দিন